ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইন থেকে ইনকাম করার জন্য, ট্রেডিশনালি আমরা অনলাইন মার্কেট গুলোতে কাজ করে থাকি ফ্রিল্যান্সার হিসাবে। এখন, আপনি কি অনলাইন থেকে ইনকাম করে স্বাবলম্বী হতে চাচ্ছেন? অথবা নিজের কোন স্কিল সেল করে ইন্টার্নেট এর মাধ্যমে অর্থ ইনকাম করতে চাচ্ছেন? আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সার রা অনেক মার্কেট এ এবং মার্কেট এর বাইরে কাজ করেন। এই সম মার্কেট এর মধ্য, ফাইভার(Fiverr.Com) হচ্ছে অন্যতম জনপ্রিয় মার্কেট! ফাইভার এর এ টু জেড বা Fiverr Bangla Tutorial জানাতেই আজকের এই আর্টিকেল!
ফাইভার কি এবং কিভাবে কাজ করে?
ফাইভার হচ্ছে, ইজরায়েল নির্ভর একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট যারা অনলাইন মার্কেট এর ট্রেডিশন এর বাইরে গিয়ে নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করে ২০০৫ সালে এবং সফলও হয়। এই মুহুর্তে ফাইভার অন্যতম যায়ান্ট মার্কেট। আমাদের দেশের কয়েক হাজার মানুষ এই মার্কেট এ সফলাতার সাথে কাজ করেন। প্রতিদিন নতুন করে অনেক মানুষ এখানে জয়েন করছেন কাজের জন্য। তাদের মধ্য অনেকেই কাজ পেয়ে যাচ্ছেন সফলতার সাথেই।
এই মার্কেটে, মুলত সার্ভিস প্রভাইডার বা ফ্রিল্যান্সারদের সেলার বলা হয়। ফাইভার, আমাদের লোকাল বাজারে মতই। যেমন বাজারে অনেক দোকান থাকে এবং সবাই তাদের পন্য সাজিয়ে রাখেন। আমরা সেখানে যাই, ক্যাটাগরি, পছন্দ আর দামের উপর নির্ভর করে কিনে নেই। যদিও এর বাইরে অনেক মাইনর নিয়ামক কাজ করে। তেমনি, এখানে সেলার রা তাদের সার্ভিস গুলো সাজিয়ে গুছিয়ে গিগ হিসাবে অফার করে রাখেন। আর বায়ার রা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেলারদের খুজে বের করেন। তার পর কথা বলে, ভালো লাগলে প্রাইস ফিক্স করে কাজ করিয়ে নেন।
ফাইভারে একাউন্ট করে কিভাবে?
ফাইভার.কম এ গিয়ে ফেজবুকের মতই একাউন্ট খুলতে হবে। সব তথ্য ঠিক ঠাক দিয়ে মোবাইল ভেরিফাই করলেই এখানে এক্সেস পেয়ে যাবেন। তবে একাউন্ট খোলার আগে অবশ্যই কিছু ব্যাপার আপনার জেনে নেয়া উচিৎ এখান থেকে। এর বাইরে, ফাইভার এর সাথে আপনার সোস্যাল একাউন্ট গুলো কানেক্ট করা লাগবে। ব্যাস, এবার আপনি গিগ/সার্ভিস অফার করার জন্য রেডি!
কিভাবে কাজ করে আর কি কি কাজ করে?

এখানে মুলত গিগ গুলোতে সার্ভিস ডিটেইলস লিখতে হয়, রিলেটেড ছবি, টাইটেল এবং প্রাইস দিতে হয়। এর পর গিগ পোস্ট করে দিলে সেটা মার্কেট এ চলে যায়। তবে অনেক সার্ভিস এর গিগ দেয়ার জন্য রিলেটেড পরিক্ষার দরকার হয়। অনেক সময় গিগ গুলো লাইভ ইন্ডেক্স হতে ২৪ ঘন্টা সময় নেয়। ভালোভাবে গিগ সাজাতে পারলে দ্রুত কাজ পা ওয়া যায় যদিও একবারে নতুন অবস্থায় কাজ পেতে বেশ বেগ পেতে হয়।
কি কি সার্ভিস অফার করা যায় সেটা না বলে বরং বলা উচিৎ কি কি করা যায় না? এই মার্কেট এ ফেইক সার্ভিস যেমন ফেক রিভিউ, ফেক ট্রাফিক ড্রাইভ, ফেজবুক লাইক, স্প্যামিং এর সার্ভিস সেল করা যায় না। এডাল্ট কনটেন্ট রিলেটেড সার্ভিস অফার করা যায় না। অন্যর ব্যাক্তিগত তথ্য বিক্রি করা যাবে না। fiverr bangla tutorial এর মাধ্যমে জানাতে চাই, এর বাইরে সব কিছুই সেল করা যাবে। যেটা জানেন, যেটা আপনার স্কিলস সেটাই সেল করতে পারেন। সব কিছু সেল করা যায় দেখেই আগে ফাইভার নিয়ে ট্রল হত। যেমন, যদি ডান্স জানেন, সেটার টিঊটেরিয়াল সেল করা যাবে, যদি জ্যোতিষী হন তাহলে সেটার সার্ভিস সেল করা যায় এখানে, যদি কিহুই না জানেন, দোয়া/প্রেয়ার সেল করতে পারবেন। তবে বাংলাদেশীরা মুলত ডিজিটাল স্কিল যেমন, ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং এর কাজ গুলো বেশী করে থাকেন।
টাকা তুলতে হয় কিভাবে?

এখানে ৩ রকম পেমেন্ট মেথড আছে। ১। পেপাল, ২। পেওনিয়ার এবং ৩। ব্যাংক ট্রান্সফার! বাংলাদেশে পেপাল এর সার্ভিস চালু নেই তাই এই মেথডে টাকা তোলা সম্ভব নয়। তবে বাইপাস অনেক সিস্টেম করে টাকা তোলা যেতে পারে। পেপাল এর ট্রানজেকশন ফ্রি! পেওনিয়ার এর মাধ্যমে টাকা তুলতে চাইলে, পেওনিয়ার এ একাউন্ট করে মাস্টার কার্ড এর মাধ্যমে টাকা তুলতে পারবেন। আর ব্যাংক এ টাকা তুলতে চাইলেও, টাকা প্রথমে পেওনিয়ার একাউন্ট এ নিতে হবে এবং সেখান থেকে ব্যাংক এ! পেওনিয়ার বা ফাইভার রেভিনিউ কার্ড একই এবং এই কার্ড দিয়ে আর্জেন্ট টাকা তুলতে ৩ ডলার চার্জ দিতে হবে। ২ ঘন্টার মধ্য টাকা জমা হয়ে যাবে আপনার একাউন্ট এ। আর ১ডলার ফিস এ সময় লাগবে ৪৮ ঘন্টা যদিও বাস্তবে কয়েক ঘন্টার মধ্য টাকা জমা হয়ে যায়। আর ইউএস এর গ্রাহক রা ১ডলার চার্জ দিয়ে সরাসরি ব্যাংক এ টাকা তুলতে পারবেন। তবে, সব যায়গা তেই, লোকাল ব্যাংক এর ট্রানজেকশন ফিস কেটে নিতে পারে তাদের পলিসি অনুযায়ী!
আমি কিভাবে কাজ করতে পারি?
Fiverr bangla tutorial এর টিউটেরিয়াল গুলো দেখুন techalertbangla.com ব্লগ এ! এর পর, প্রথম কাজ হচ্ছে স্কিল ডিফাইন করা। কি রকম সার্ভিস সেল দিতে চান, কোনটা সব থেকে ভালো। তার পর স্যাম্পল কাজ রেডি করে ফাইভার এ একাউন্ট করুন। একাউন্ট করার আগে অবশ্যই ফাইভার এর টার্মস এন্ড কন্ডিশন দেখে নিন খুভ ভালো করে। প্রফাইল সম্পুর্ন রেডি করার সাথে সাথে গিগ নিয়ে স্টাডি করুন! এবং ফাইনালি গিগ পাবলিশ করুন। যদি সেল না আসে, ধৈর্য ধরে গিগ মার্কেটিং করুন।
একাউন্ট হ্যাক থেকে রক্ষা করুন । ফিশিং ওয়েবসাইট সম্পর্কে সতর্ক বার্তা
ইংরেজী তে দক্ষতা কেমন লাগবে?
শুধু ফাইভার না, যে কোন মার্কেট এ কাজ করার জন্য বা বাইরের দেশের ক্লায়েন্ট এর কাজ করার জন্য, ইংরেজী কমিউনিকেশন এর দক্ষতা থাকা লাগবে। ক্লায়েন্ট কিছু লিখে পাঠালে সেটা পড়ে বুঝা লাগবে, আর ক্লায়েন্ট এ লিখে বুঝাতে পারা লাগবে ইংরেজীতে। আর মাঝে মধ্য হয়ত কথাও বলা লাগতে পারে। যদি কথা না বলেও অনেকে সফলতার সাথেই মার্কেট গুলোতে কাজ করছেন।
কত টাকা ইনকাম করা যাবে?
কেমন কি ইনকাম হবে সেটা সরাসরি বলা সম্ভব নয়। কি কাজ করছেন, কি স্কিলস আছে আপনার, সময় কেমন দিচ্ছেন আর কাজের চাহিদা কেমন তার উপর নির্ভর করে কেমন ইনকাম হবে। তবে বাংলাদেশী কয়েক হাজার মানুষ এই মার্কেট থেকে কাজ করে ফ্যামিলি চালিয়ে নিচ্ছেন। অনেকে টিম নিয়ে কাজ করেন। ২০১৫ সালের দিকে কাজ শুরু করে আমি নিজেও টিম নিয়ে কাজ করেছি। একটু ডেডিকেশন দিয়ে কাজ করলে ১হাজার-১২শ ডলার ইনকাম করা খুব বেশী কঠিন কাজ নয়।
তিনটি বিষয় না জেনে কখনই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন না
ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ১০০০/মাস ডলার ইনকাম করুন
সবার শেষে একটা কথা না বললেই নয়, কোন রকম স্কিলস ছাড়া ফাইভার বা অন্য মার্কেট এ একাউন্ট করবেন না। এতে করে কাজ বুঝতে বুঝতে অনেকে হাড়িয়ে যায়, অনেকে অল্প দামে কাজ করে। এর প্রভাব পরে পুরো ফ্রিল্যান্স কমিউনিটির উপর!
14 thoughts on “ফাইভার মার্কেটপ্লেস | Fiverr Bangla Tutorial”