ফাইভার এ সেলার বা ফ্রিল্যান্সার রা মুলত গিগ সেল করে এবং বায়ার রিকোয়েস্ট থেকে কাজ পেয়ে থাকে। তবে বায়ার রিকোয়েস্ট ফাইভার এ তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় না, মুলত গিগ হচ্ছে ফাইভার এ কাজ করার মেইন রাস্তা বলা যায়। একটি ভালো গিগ (fiverr gig seo) যেমন কয়েক ঘন্টায় সেল এনে দিতে পারে তেমনি, একটি খারাপ গিগ দিনের পর দিন সময় নষ্ট করতে পারে। সেল হয় না এমন গিগ বানিয়ে আমাদের কোন লাভ নেই। তাই, আমরা আজ শিখব কিভাবে একটি সেল-এবল, প্রফেশনাল, হাই কোয়ালিটি গিগ বানানো যায়। গিগ গ্লোসারিতে আমরা আগেই, গিগ এর টার্মস নিয়ে কথা বলেছি তাই, এই আর্টিকেল এ টার্মস নিয়ে বিস্তারিত বলা হবে না।
গিগ টাইটেলঃ
গিগ সার্চ র্যাংকিং এ আসার জন্য টাইটেল এর গুরুত্ব সব চেয়ে বেশী। প্রথমবার যে টাইটেল দিয়ে গিগ পাবলিশ করবেন সেটা দিয়ে গিগ এর URL তৈরি হবে। এবং এটা আর পরিবর্তন করা যাবে না। এই URL ফাইভার সার্চ এর বাইরে, গুগোল বা বিং সার্চ এ সমান ভাবে কাজ করবে। তাই, গিগ (fiverr gig seo) টাইটেল দেয়ার সময়, সার্চ করে এমন কিওয়ার্ড যুক্ত করতে হবে।
প্রথমে শুধু কিওয়ার্ড দিয়ে একটি সম্পু্র্ন সেনটেন্স বানান এবং সেটা দিয়ে গিগ পাবলিশ করে দিন। এর পর গিগ এডিট করে, টাইটেল এ আকর্ষনীয় ওয়ার্ড যুক্ত করুন। যেমন, বায়ার ফ্লায়ার ডিজাইন দিয়ে সার্চ করতে পারে। আপনি প্রথমে, “ডিজাইন ফ্লায়ার ফর ইউর মিউজিক ইভেন্ট” দিতে পারেন। এতে করে, ফ্লায়ার ডিজাইন এবং মিউজিক ইভেন্ট কিওয়ার্ড URL এ চলে আসবে। এবং গিগ লাইভ হওয়ার পর, “ডিজাইন আই ক্যাচিং, প্রফেশনাল ফ্লায়ার ফর ইউর মিউজিক ইভেন্ট ইন ২৪এইচ“ দিতে পারেন। তাহলে টাইটেল আরও আকর্ষনিয় হবে।
ফাইভার নতুন একাউন্ট? পাঁচ পরামর্শ মেনে চললে কাজের অভাব হবে না কখনও!
টাইটেল দেয়ার সময় অতিরিক্ত বড় করবেন না আবার ছোটও করবেন না। কিওয়ার্ড রাখতে গিয়ে সেনটেন্স এর স্ট্রাকচার নষ্ট করবেন না। ভালো হয়, যদি অনেক গুলো গিগ সার্চ করে, তাদের টাইটেল দেখে, একটা সুন্দর এবং ইউনিক টাইটেল বানান। তে করে কিওয়ার্ড মিস হবে না আবার সুন্দর স্ট্রাকচার মিস হবে না।
ফিচার্ড ইমেজ এবং গ্যালারি ইমেজঃ
একজন বায়ার গিগ এ ক্লিক করবে কি না, সেটা অনেকাংশে নির্ভর করে গিগ এর ফিচার্ড ইমেজ এর উপর। টপ সেলিং গিগ আর নো সেলিং গিগ এর ফিচার্ড ইমেজ এর দিক তাকালেই, দেখতে পারবেন পার্থক্য কোথায়। যদি নিজে ডিজাইন পারেন, তাহলে সময় নিয়ে ডিজাইন করুন, যদি না পারেন তাহলে কোন ডিজাইনার কে দিয়ে ডিজাইন করিয়ে নিন। ডিজাইন যত ভালো হবে, বায়ার এর ক্লিক করা সম্ভাবনা তত বেশী।
একটা ইমেজ এর স্টান্ডার্ড সাইজ হচ্ছে ৫৫০*৩৭০ পিএক্সেল এবং ওয়েট সর্বচ্চ ৫মেগাবাইট। রেশিও ঠিক রেখে কিছুটা বড় ইমেজ ডিজাইন করুন কারন ফাইভার এর এখন ইমেজ জুম করে ফুল স্ক্রিন করা যায়। ইমেজ এর চার দিকে যায়গা রাখুন যাতে জুম আউট করলে মুল কনটেন্ট বাইরে না চলে যায়। অতিরিক্ত টেক্সট এডিয়ে, মুল সার্ভিস কে ফোকাস করে, সিম্পল ডিজাইন করুন। ডিজাইন কালার এর দিকে খেয়াল করুন যেন কালার ডিস্টার্বিং না হয়। উদাহরন হিসাবে, টপ সেলিং গিগ এর ছবি দেখুন। তাদের থেকে আইডিয়া নিন কিন্তু কপি করবেন না।
ফাইভার লেভেলস কি? কোন লেভেল এর কি কি সুবিধা?
গ্যালারি ইমেজ ডিজাইন করার সময়, স্যাম্পল কাজ কে হাইলাইট করুন। কাজের ছবি যুক্ত করে সাইড এ বেসিক তথ্য দিয়ে দিন যাতে বায়ার সহজে ছবি দেখেই আইডিয়া পাইয়। বায়ার মুলত আগ্রহী হলে গ্যালারির ছবি গুলো দেখে থাকে। আগ্রহী বায়ার কে, বায়িং বায়ার বানাতে চাইলে, ভালো করে গ্যালারি ইমেজ ডিজাইন এর বিকল্প নেই। শুরুতে ফাইভারে ৩টি ছবি যুক্ত করা যায় প্রতিটি গিগ এ। এর বাইরে ফাইভার এ গিগ (fiverr gig seo) ভিডিও যুক্ত করা যায়, যেটার বিস্তারিত দেখতে পারেন এই লিংক এ!
গিগ ডেস্ক্রিপশনঃ
১২০০ শব্দের মধ্য সার্ভিস কে ফুটিয়ে তুলতে হবে। লাইন বোল্ড, ইতালিক এবং হালাইটস করা যাবে। ডেস্ক্রিপশনে অদরকারী কিছু লিখবেন না। শুরুতে ২ লাইন এর মধ্য মুল কিওয়ার্ড রাখুন। এর পর কি কি অফার করছেন সেটা লিখুন। তার পর লিখুন, কেন অন্যদের থেকে আপনার সার্ভিস ভালো আর ফাইনালি গ্রিটিংস দিন।
ডেস্ক্রিপশন টিপসঃ
- সার্ভিস লিষ্ট পয়েন্ট হিসাবে লেখা যেতে পারে।
- গুরুত্বপুর্ন তথ্য হাইলাইটস করে দিন।
- অতিরিক্ত হাইলাইটস করবেন না।
- চোখের ডিস্ট্রাব হয় সেভাবে বোল্ড করবেন না।
- টার্গেট কিওয়ার্ড গুলো ডেস্ক্রিপশনের ব্যাক্য গুলোর মধ্য ব্যাবহার করুন।
- গার্বেজ টাইপ বর্ননা দিবেন না বা অন্য গিগ থেকে কপি করবেন না ।
মনে রাখবে, গিগ এর বর্ননা পড়েই, মুলত একজন ক্লায়েন্ট ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেয় অর্ডার করবেন কি না। আর ক্লায়েন্ট রা প্রতিটি গিগ এ খুব কম সময় দেয়, তাই শুরুর ২ লাইন খুব ই গুরুত্ব পুর্ন সেল পাওয়ার জন্য। অন্য গিগ গুলো ভালো করে স্টাডি করুন তাহলে সহজে বুঝতে পারবেন কি লিখা লাগবে।
আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে, ফাইভার এ ক্যানসেলেশন একাউন্ট এ বাজে প্রভাব ফেলে। ক্যান্সেলিং থেকে বাঁচার জন্য, গিগ এর বর্ননায় বায়ার কে অর্ডার এর আগে মেসেজ দেওয়ার জন্য বলতে পারেন। যদি সার্ভিস দেয়ার জন্য স্কাইপ/ইমেইল আইডি লাগে, তাহলে সেতা বর্ননায় স্পষ্ট করে লিখে দিতে হবে।
গিগ ট্যাগসঃ
প্রতিটি গিগ এর ট্যাগস দিতে হয় এবং সর্বচ্চ ৫টি ট্যাগ দেয়া যায়। এটা মুলত ফাইভার সার্চ এর জন্য ব্যাবহার করা হয়। রিলেভেন্ট ট্যাগ দিন। মুল কিওয়ার্ড সবার আগে দিন। একই ট্যাগ রিপিট করবেন না।
গিগ প্রাইসঃ
গিগ এর প্রাইস স্বাভাবিক রাখুন। নতুন সেলারদের জন্য ৫ডলার থেকে শুরু করাই সব থেকে ভালো। আপনার সার্ভিস কে ভেজ্ঞে ৫ডলার এ কি কি দেয়া যায় সেটা ফিক্স করুন। তার পর গিগ এক্সট্রা এবং অন্যান্য পইয়াকেজ এ দাম ফিক্স করে দিন।
তিনটি বিষয় না জেনে কখনই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন না
ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ১০০০/মাস ডলার ইনকাম করুন
ফ্যাক(FAQ) কোয়েশ্চেনঃ
সম্ভাব্য সব প্রশ্ন এবং তার উত্তর যুক্ত করে দিন। অনেকে এই কাজ টি ইগনর করে থাকে কিন্তু নতুন সেলার হিসাবে এটা যুক্ত করা সব থেকে ভালো। ফাইভার নিজে এটার রিকমেন্ট করে থাকে। আর যে সব গিগ (fiverr gig seo) এ সব তথ্য যুক্ত করা থাকে, ফাইভার সেগুলা র্যাংক দেয়ার সময় অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।
গিগ রিকোয়ার্মেন্টঃ
কাজটি শুরু করতে যা যা লাগবে সেগুলা লিখে দিন যাতে বায়ার সেগুয়াল সাবমিট করে অর্ডার স্টার্ট করে দিতে পারেন।
কিভাবে গিগ পোস্ট করতে হয়ঃ
একেবারে নতুন একাউন্ট হলে, একাউন্ট এ লগিন করার পর, সেলিং একাউন্ট এ গেলেই অপশন দেখতে পারবেন। সেখান থেকে ক্লিক করলে, একাউন্ট এ নিয়ে যাবে আপডেট করার জন্য। আপডেট শেষ হলে, গিগ ক্রিয়েট করতে পারবেন। গিগ পাবলিশ করার পর, অনেক ক্যাটাগরিতে রিলেটেড এক্সাম দেয়া লাগে এখন। আর পুরাতন একাউন্ট হলে, গিগ লিষ্ট থেকে কিয়েট নিউ গিগ দিলে, বাকী শব আগের মতই।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুরু । একাউন্ট খুলে কাজ শুরু করুন আজ এখনই
এবার, নতুন গিগ দিন, উপরের সব নিয়ম মেনে, এপ্লাই করে। তাহলে গিগটি প্রফেশনাল হবে এং সেল জেনারেট করবে আশা করা যায়। নতুন অবস্থায় সেলারদের স্ট্রাগল করা লাগে কিন্তু লেগে থাকলে, নিয়মিত অন্য গিগ দেখলে, উন্নতি করলে সেল আসবে।
One thought on “ফাইভার গিগ এর পূর্ণাঙ্গ টিউটেরিয়াল যা অন্য কোথাও পাবেন না!”