আজকের ব্লগটি বাংলাদেশি সফটওয়্যার কোম্পানি সিলিকভি এর রিভিউ নিয়ে। এই কোম্পানিটি আমাদের কাছে এত ইউনিক লেগেছে যে, সিলিকভি এর পুরো রিভিউ দেয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। আপনি যদি টেক লাভার হন, কম্পিউটার সায়েন্স এর শিক্ষার্থী হন বা কম্পিউটার নিয়ে কোন আগ্রহ থাকে, টেক বেইজ কাজ করতে চান, সিলিকভি এর রিভিউ আপনার জন্য।
সিলিকভি সংক্রান্ত সকল তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ইন্টারনেট থেকে। এই ব্লগ এর সাথে সিলিকভি এর অফিশিয়াল কোন সম্পর্ক নেই। যে কোন তথ্যর লেটেস্ট আপডেট এর জন্য সিলিকভি এর ওয়েব সাইট বা ফেইজবুক পেইজ এ ভিজিট করুন।
সিলিকভি – শুরুর গল্প
ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া কয়েকজন তরুন কাজ করত একটা প্রজেক্ট নিয়ে। সকলের একটা পরিচয় দরকার ছিল, আর সকলেই কম্পিউটার সায়েন্স এর শিক্ষার্থী ছিল। অন্য যে কোন ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কাজ করা কঠিন ছিল। তাই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়, ওয়ার্ডপ্রেস ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার।
আর ১০ জনের মত ওয়ার্ডপ্রেস ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে শুরু করলেও, শুরু থেকে তাদের টার্গেট ছিল, আলাদা ভাবে কোম্পানি পরিচালনা করার। শুধু পরিচয় তৈরি নয়, অন্য মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা, তাদের জন্য কিছু করাও অন্যতম উদ্যেশ্য ছিল তাদের।
কোম্পানি কালচার
সিলিকভি এর কালচার অন্যান্য কোম্পানি থেকে অনেক ভাবেই আলাদা। যেমন, এইখানে কোম্পানির সিনিয়র কর্মীরা প্রডাক্ট এর প্রফিট শেয়ার পায়। যেটা অনেক কোম্পানিতে চিন্তাই করা যায় না। ২-৩ বছরের মধ্য সিনিয়র কর্মী হওয়া সম্ভব। এবং সিনিয়র হওয়ার পর মুল সব সুবিধার সাথে অতিরিক্ত ইনকামের সুযোগ আছে।
এর বাইরে যে কোন কর্মী অফিস আওয়ার এর বেশি অতিরিক্ত কাজ করে আলাদা ইনকামের সুযোগ পায়। তাই যে কারও ইমার্জেন্সি বা এক্সট্রা ইনকামের জন্য বাইরের কাজ করার দরকার পরে না। এখানে কর্মীরা অবশ্য ট্রেডিশনাল কোম্পানি থেকে অনেক বেশি স্যালারি পেয়ে থাকে।
নিজস্ব প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগঃ
কর্মীদের একটা বড় আফসোস থাকে, কোম্পানিতে চাকরি শুরু করে নিজের স্বপ্নের প্রজেক্ট এ কাজ করার সুযোগ হয় না। কিন্তু সিলিকনভি এর কালচার আলাদা। আপনি নিজের আইডিয়াতে কাজ করতে পারবেন। আবেদন করলে ২০% আপনার নিজ প্রজেক্ট এ বরাদ্দ দেয়া হবে। চাইলে টিম করে কাজ করতে পারেন। আর প্রজেক্ট সাক্সেস হলে তো প্রফিট পাবেন ই।
ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্সঃ
সিলিকবি তে ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স করে কাজ করা হয়ে থাকে। তাই ছুটির পর অতিরিক্ত কাজ করা বা উইকএন্ড এ আলাদা কাজ করা লাগে না। অফিস শুরু হয় সকাল ৮ টায়। লাঞ্চ, নামাজের ব্রেক এর সাথে সাথে চলে বিশাল কর্মযগ্য। আর অফিস শেষ হয় ঠিক ঠিক বিকাল ৫টায়।
সিলিকনভি নামটি এসেছে মুলত সিলিকন ভ্যালি, টেক দুনিয়ার মাথার সংক্ষিপ্ত অংশ থেকে। দেশিও একটা কোম্পানি সিলিকন ভ্যালির বিলিয়ন ডলার কোম্পানির মর হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে শুরু করায়, নামটিও সেভাবে দেয়া হয়েছে।
সার্ভিস দে অফার
ওয়ার্ডপ্রেস সংক্রান্ত সকল সার্ভিস অফার করে থাকে। সিলিকভি এর আন্ডারে থিম বাজার রয়েছে। যেখান থেকে আপনি খুব কম প্রাইস এ থিম কিনে নিতে পারবেন। এর বাইরে কাস্টম থিম ডেভেলপমেন্ট, প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট, বাগ ফিক্সিং, স্পিড অপ্টিমাইজেশন এর সুযোগ আছে এখানে।
ফিশিং ওয়েবসাইট সতর্ক বার্তা | ফেজবুক একাউন্ট হারানোর আগে সতর্ক হন
শেষ কথা
সিলিকভি থেকে যদি কোন কর্মীকে টার্মিনেট করা হয়, তাহলে তাকে ২ মাসের বেতন দিয়ে দেয়া হয়। এর মাধ্যমে কর্মীদের প্রতি কোম্পানির দায়ত্ব প্রকাশ পায়। সিলিকভি কোম্পানিটি এত দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে মুলত এর কালচার আর কোয়ালিটি এর জন্য। এটি আমার দেখা এক মাত্র বাংলাদেশি সফটওয়্যার কোম্পানি, যেখানে পার্ফেকশন এর থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় এক্সিলেন্সি এর। এখানে চাকরি করা একটা প্রাউড ম্যাটার।