ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট লেনদেল এর ক্ষেত্রে, বাংলাদেশীদের কাছে সব থেকে জনপ্রিয় মেথড হচ্ছে পেওনিয়ার। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট থেকে টাকা উত্তলন, আউটসোর্সিং, গুগোল বা সার্চ ইঞ্জিন এ বিজ্ঞাপন দিতে, সোস্যাল সাইট যেওম্ন ফেজবুকে বিজ্ঞাপন দিতে ডলার দিয়ে পেমেন্ট করতে হয়। বাংলাদেশ থেকে ইবিএল একুয়ায়া এবং ব্যাংক এশিয়ার স্বাধীন মাস্টার কার্ড, ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সাপোর্ট করলেও, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট থেকে টাকা উত্তলন এর জন্য পেওনিয়ার কার্ড এর বিকল্প নাই। পেওয়নিয়ার কার্ড (Get payoneer master card in bangladesh) প্রায় সব মার্কেট সাপোর্ট করে আর বাংলাদেশে ব্যাংক গুলো সাপোর্ট করে।
পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড কি, কিভাবে কার্ড পেতে হবে, ফিস কত এই সব বেসিক ব্যাপার নিয়ে এই আর্টিকেল। এই টপিকে অনেক আর্টিকেল থাকলেও, এই আর্টিকেল ডিফারেন্ট। এখানে, এমন কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে যেগুলা অন্য সব যায়গা হাইড করা হয়েছে তাদের ব্যাবসা এর স্বার্থে।
পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড কি?
ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট প্লাটফর্ম কোম্পানি হচ্ছে পেওনিয়ার! ওয়ার্ল ওয়াইড ৪মিলিয়ন এর বেশী গ্রাহক, ৩৫টির বেশী ভাষা সাপোর্ট করে এই কোম্পানি। পেওনিয়ার এর প্রিপেইড কার্ড ই হচ্ছে পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড। এক সময় বাংলাদেশিদের জন্য এই কার্ডটি ফ্রি ছিল এবং কোন প্রিক্রেডিট ব্যালেন্স ছাড়াই কার্ড গ্রহন করা যেত, কিন্তু সিমাহীন স্প্যামিং আর কার্ড মিস-ইউজ এর কারনে, এই কার্ড পেতে এখন বেশ ধকল পেতে হয়।
২০১৪-১৫ সালের দিকে, এই কার্ড নিয়ে ব্যাবসা হত লোকালি। যেমন, একজন ব্যাক্তি হয়ত অনেক গুলো কার্ড অর্ডার করে নিয়ে আসত আর সেগুলা আবার বোকা লোকজন এর কাছে সেল দিত। আর, মানুষ জন মাস্টার কার্ড এর প্রেস্টিজ লেভেল এ উঠার জন্য, এই কার্ড টাকা দিয়ে কিনত। আমার একটি মাস্টার কার্ড আছে বা আমিও মাস্টার কার্ড এর মালিক – এই টাইপ প্রেস্টিজ আর কি।
ফাইভার কি সেটা জানেন তো! ফাইভার মার্কেট থেকে ইনকাম শুরু করুন এখনি
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুরু । একাউন্ট খুলে কাজ শুরু করুন আজ এখনই
পেওনিয়ার এর বিজ্ঞাপন এ একটা কমন ডায়লগ ছিল, ফ্রিতে নিন পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড ২৫ ডলার সহ। এমনকি এটা দিয়ে মানুষ ফেজবুকে পেইড বিজ্ঞাপনও দিত। এর কারন হচ্ছে, পেওনিয়ার এ রেফারেল সিস্টেম আছে যেখানে, কেউ আপনার রেফারেল থেকে কার্ড নিয়ে ব্যাবহার করলে সে নিজে আর আপনি উভই ২৫ডলার পাবেন এক বার এর জন্য। কিন্তু এখানে একিটা শুভংকর এর ফাকি ছিল।
শুভংকর এর ফাকি টা আবার কি?
আপনি যদি কারও রেফারেন্স এ পেওনিয়ার (Get payoneer master card in bangladesh) কার্ড নেন, তাহলে শুরুতে ২৫ ডলার পাবেন এটা সত্য, তবে এর সাথে সাথে আপনার কার্ড এ বাৎসরিক ৩০ ডলার এর মত ফিস যুক্ত হবে। মানে শুধু মাত্র ১বার ২৫ ডলার পাবেন কিন্তু এর বিনিময়ে অনেক বার আপনাকে ৩০ডলার ব্যয় করতে হবে। এমন কি কার্ড দিয়ে তেমন কিছু না করলেও। কিন্তু সেই একই কার্ড যদি, মার্কেট এর মাধ্যমে নেন বা সরাসরি নেন, তাহলে শুরুতে ২৫ডলার পাবেন না ঠিক ই তবে বাৎসরিক চার্জ কমে ৫-১০ডলার হয়ে যাবে। এই কথাটা কেউ বলে না, কারন সবাই চায়, নতুনদের থেকে কিছু কামিয়ে নিতে।
কিভাবে বাৎসরিক কম চার্জ এ কার্ড পেতে পারি?
পেওনিয়ার এর ওয়াব সাইট থেকে সরাসরি অথবা কোন মার্কেট এর রেফারেল এ যদি একাউন্ট করেন তাহলে কম চার্জ কাটবে। ফাইভার থেকে পেওনিয়ার একাউন্ট করতে চাইলে, রেভিনিউ পেইজ এ গিয়ে উথড্র তে ক্লিক করা লাগবে। যদি একাউন্ট এ কার্ড যুক্ত না থাকে, তাহলে কার্ড এর জন্য সাইন-আপ এবং লগিন অপশন যুক্ত হবে। সেখান থেকে তথ্য দিয়ে সাইন-আপ করতে হবে। অন্য মার্কেট এ একটু খুজে দেখলেই এই অপশন খুজে পাবেন। পেওনিয়ার এ সাইন আপ কিভাবে করতে হবে সে ব্যাপারে ইউটিউব ঘাটলে অনেক বাংলা এবং ইংরেজী টিউটোরিয়াল পাবেন। যদি সমস্যা হয়, পেওনিয়ার বাংলাদেশ এর ফেজবুক গ্রুপ এ পোস্ট দিতে পারেন।
একাউন্ট খুলতে কি কি লাগবে?
পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার জন্য, একটি ইমেইল, মোবাইল নাম্বার, ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর স্ক্যান কপি এবং নাম-ঠিকানা জাতীয় কিছু তথ্য লাগবে। যদি কার্ড এ ব্যাংক একাউন্ট যুক্ত করতে চান, তাহলে ব্যাংক একাউন্ট এর তথ্য আর সুইফট কোড লাগবে। সুইফট কোড একটু গুগোল করলেই পেয়ে যাবেন। একাউন্ট এ প্রয়োজনীয় তথ্য দিলে, তারা সেগুলা ভেরিফাই করে একাউন্ট এপ্রুভ বা রিজেক্ট করে দিবে। সাধারনত এই প্রসেস ৭দিনের মধ্য হয়ে যায়। এর বেশী সময় লাগলে, তাদের লাইভ সাপোর্ট এ কথা বলা যেতে পারে। তথ্য সঠিক হলে একাউন্ট সাধারনত রিজেক্ট করে না।
পেওনিয়ার কার্ড পেতে হলে, একাউন্ট এপ্রুভ হওয়ার পর একাউন্ট এ ১০০ডলার ব্যালেন্স যুক্ত করতে হবে। এটা কোন মার্কেট থেকে, বা ইন্টারন্যাশনাল ক্লায়েন্ট থেকে নিতে পারবেন। বাংলাদেশি অন্য কার্ড হোল্ডার থেকে না নেয়াই ভালো। একাউন্ট এ ব্যালেন্স যুক্ত হলে, মাস্টার কার্ড এর জন্য আবেদন করা লাগবে এবং শিপিং এড্রেস দিতে হবে। শিপিং এড্রেস সতর্কতার সাথে দিবেন তাহলে কার্ড ঠিক ঠাক আসবে। উল্লেখ্য, কার্ড ছাড়াও আপনি শুধু একাউন্ট দিয়ে সব টাকা ব্যাংক এ ট্রান্সফার করতে পারবেন।
পেওনিয়ার একাউন্ট এবং মাস্টার কার্ড এর কিছু নেগেটিভ দিকঃ
- ট্রানজেকশন ফি অন্যদের তুলনায় কিছুটা বেশী।
- অনেক সময় কার্ড ঠিক সময়ে আসে না।
- একাউন্ট ক্লোজ করে দেয়া হয় অনেক সময়।
- কার্ড ব্যাবহার না করলেও, কার্ড এর ফিস দিতেই হয় (কার্ড গ্রহন করলে)।
- সাপোর্ট এ লম্বা সময় অপঅক্ষা করতে হয়।
Get payoneer master card in bangladesh, পেওনিয়ার একাউন্ট এ কিভাবে ব্যাংক যুক্ত করবেন, কিভাবে পেপাল থেকে বিল নিবেন, ইন্টারন্যাশনাল ব্যাবহার বিধি নিয়ে তাদের ইউটিউব চ্যানেলে বিস্তারিত আছে। এর বাইরে, অনেক ইউটিউবার অনেক ভিডিও বানিয়েছেন সেগুলা দেখতে পারেন। কার্ড এবং একাউন্ট নিয়ে কোন সমস্যা হলে, বাংলাদেশে এম্বাসেডর , বিসনেস ডেভেলপার আছেন, তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ফিশিং ওয়েবসাইট সতর্ক বার্তা | ফেজবুক একাউন্ট হারানোর আগে সতর্ক হন
বাজেটের মধ্য সেরা মাইক্রোফোন লিষ্ট । ৩ নাম্বার টা দেখে অবাক হবেন না!
সব শেষে একটা কথা না বললেই নয়, কার্ড দরকার না হলে কার্ড নিবেন না। অপ্রয়োজনে একাউন্ট করা থেকে বিরত থাকুন। বাংলাদেশীদের জন্য, ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে খুবই কম। তার উপর যদি পেওনিয়ার বন্ধ হয়ে যায় কোন ভাবে, তাহলে আমাদের লাখ লাখ ফ্রিল্যান্সার আর অনলাইন ওয়ার্কার রা বিপদে পড়ে যাবে। তাই, নিজে স্প্যামিং থেকে বিরত থাকুন, অন্যকে বিরত রাখুন।
3 thoughts on “পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড কি, কেন, কিভাবে । ফ্রি ২৫ ডলার নাকি ফাঁদ!”